কমিউনিস্ট বিরোধী যারা তারা মানবতাবিরোধী পাকিস্তানীদের দোসর,জাহাঙ্গীর হোসেন

admin
0


কমিউনিস্টরা ব্রিটিশদের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী তথা বনিকদের  শাসন না পেলেও ব্রিটিশ সরকারের শাসনের নামে অপশাসন পেয়েছে। ব্রিটিশদের যম ছিলো কমিউনিস্টরা। পুঁজিবাদী অর্থনীতি মিশেলে জমিদার প্রথা উচ্ছেদের সংগ্রামে কমিউনিস্ট বিপ্লবীরা ছিলো সামনের কাতারে। পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বন্ধের সংগ্রামও চালিয়েছে সমানতালে। ব্রিটিশ তাড়াতে পারলেও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি সমূলে উৎপাটনের সময় আর কিছু বছর অপেক্ষার আগেই ভারত ভাগ হয়ে যায় দ্বিজাতি তত্ত্বে। পূর্ব পাকিস্তান এক বিরাট সাম্প্রদায়িক গহব্বরে চলে যায়। কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসে। উঠতি বুর্জোয়া তথা পুঁজিপতি অর্থ্যাৎ ধনীক শ্রেণি কমিউনিস্ট ধ্বংশের পথে নামে। এই উঠতি বুর্জোয়াদের প্রধান হাতিয়ার হয়ে যায় সাম্প্রদায়িকতা। ধর্মের নামে অধর্মের কাজে নেমে পড়ে পাকিস্তানী শাসক।
কমিউনিস্ট রাজনীতি নিষিদ্ধ সত্ত্বেও কমিউনিস্টরা থেমে যায় নি। বিভিন্ন কৌশলে পাকিস্তানী অপশাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়েছিলো। একদিকে দল টেকানোর সংগ্রাম অন্যদিকে শাসকের অপশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই। লড়াই করতে করতে ৫২ আসলো, ৬৯ আসলো এরপর ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুূ্দ্ধের সংগ্রাম। 

'৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলো। কৌশলগত কারণেই কমিউনিস্টরা মুক্তিযুদ্ধে প্রধান নেতৃত্বে  আসলো না।  কিন্তু কমিউনিস্টদের মেধা প্রজ্ঞা সাহসের অবদান ছিলো অপরাপর দলের তুলনায় বেশি। রাজনৈতিক ক্লাশ, নীতি নৈতিকতার চর্চা মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামকে আরও ত্বরান্বিত করে। অধিক বিপ্লবী ও চেতনাধারী হতে সহায়ক হয়। মুক্তি সংগ্রামকে জোরদার করতে ছাত্র ইউনিয়ন - ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি গেরিলা বাহিনী প্রতিষ্ঠা পায়। লক্ষ লক্ষ কর্মী মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। হাজার হাজার নেতা-কর্মী দেশ মাতৃকার জন্য জীবন দেয়।

পাশে ছিলো প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত। আমেরিকা ছিলো পাকিস্তানের পক্ষে। সমাজতান্ত্রিক দেশ সোভিয়েত ইউনিয়ন তথা রাশিয়া ছিলো বাংলাদেশের পক্ষে। একপর্যায়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভূমিকা না রাখলে বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ড পাওয়াটা সুদূর পরাহতই ছিলো।
এভাবেই স্বাধীনতার আন্দোলন সংগ্রাম তীব্র আকারে গিয়ে ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নামক একটি দেশের জন্ম হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে অস্হায়ী সরকার গঠন হয়। এ সময় কমিউনিস্ট পার্টি ও ন্যাপের নেতারা সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন।

অথচ কমিউনিস্টদের সে সময়ের ভূমিকার কথা অনেকেই সচেতনভাবে আনছেন না। বরং কমিউনিস্ট বিরোধী অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। 

লেখক পরিচিতিঃ সাধারণ সম্পাদক 
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, চাঁদপুর জেলা কমিটি।


কমিউনিস্টদের অবদানকে যারা অস্বীকার করবে কিংবা আড়াল করবে তাদেরকে রাজাকার আলবদর আলশামস ও পাকিস্তানীদের দোসর বলতে মোটেও দ্বিধা করছি না।
তারা তাদের অজ্ঞাতসারেই মুক্তিযুদ্ধবিরোধী পক্ষে অবস্হান নিচ্ছে। নতুন করে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আরও পাকাপোক্ত করছে।

এর বিরুদ্ধে গরীব মেহনতিদের পক্ষের শক্তি কমিউনিস্ট তথা বামপন্হীরা সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে এবং শোষণমুক্তির সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।

মানবমুক্তি সময়ের প্রয়োজনেই আসবে। মানুষই অর্থনৈতিক মুক্তির পথ রচনা করবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top
;e.readyQueue=[];e.ready=function(